লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রিয়াদ হোসেনের কার্যালয় থেকে ১৭ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে।  এ ঘটনায় একই কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর বাকের আল মেহেদি, রনি, বায়োজিদ ও আলমগীরসহ চার কর্মচারীকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।  তবে একজন প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয়ে নগদ ১৭ লাখ টাকা কীভাবে আসলো এবং তা কোন খাতের এসব বিষয় নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।  স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার ও ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ জুন ক্লোজিং উপলক্ষে নেওয়া ঘুষের টাকাই উধাও হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে পিআইও’র কার্যালয় থেকে নগদ টাকা উধাওয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন।  এদিকে পিআইও কার্যালয়ের কর্মচারী বাকের আল মেহেদির স্ত্রী শারমিন আক্তার অভিযোগ করেছেন, পিআইও নিজেই তাদের বাসায় গিয়ে টাকা খোঁজার নামে তল্লাশি চারিয়েছেন।  এসময় প্রকল্প কর্মকর্তা বাসার আসবাবপত্র তছনছ ও ভাঙচুর করেছেন বলেও অভিযোগ এনেছেন শারমিন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন জন ঠিকাদারের অভিযোগ, পিআইও রিয়াদ প্রতিটি কাজেই ঘুষ নেন। ঘুষ ছাড়া তিনি কোনও ফাইল বা বিলের চেকে সই করেন না।  সম্প্রতি কয়েকটি কাজের বিলের চেকে সই করার জন্য তাদের কাছ থেকে তিনি ১ থেকে ৩ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। উপজেলা কার্যালয়ের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পিআইও'র কার্যালয়ে নগদ টাকা থাকার কথা নয়।  তিনি ঠিকাদারদের চেকের মাধ্যমে টাকা দেবেন।  টেন্ডারের পে-অর্ডারও চেকের মাধ্যমে হবে। তাহলে তার কার্যালয়ে ১৭ লাখ টাকা কোথা থেকে আসলো ? আর টাকাগুলো কিসের? যার জন্য এখনও তিনি পরিষ্কারভাবে কোনেও অভিযোগ করতে পারছেন না।  উল্টো চার জন কর্মচারীকে থানায় নিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন কর্মীরা। উপজেলার কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, জুন ক্লোজিং উপলক্ষে পিআইও তাদের কাছ থেকে কমিশন নিয়েছেন। কমিশন দিতে তাদের বাধ্য করা হয়েছে।  ঘুষের ১৬ লাখ টাকা নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের বিল পাস করে দেওয়ার কথা।  দুদকের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যের সব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেন তারা।  জানা গেছে, রিয়াদ হোসেন রামগতি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কমলনগর উপজেলার শূন্যপদে তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। বক্তব্য জানতে পিআইও রিয়াদ হোসেনের দুটি মোবাইলফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এসএমএস পাঠিয়েও তার কোনও সাড়া মেলেনি।  এ বিষয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, থানায় চারজনকে ডাকা হয়েছে।  তবে পিআইও এখনও কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ দেননি। এটা তাদের নিজস্ব বিষয়।  কত টাকার সমস্যা জানতে চাইলে ওসি জানান পিআইও’র অভিযোগ ১৭ লাখ টাকার মতো উধাও হয়েছে।  জানতে চাইলে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সংবাদকর্মীদের বলেন, চার জনকে থানায় ডাকার কথা আমি শুনেছি। তবে কী কারণে বিষয়টি আমার জানা নেই।  পিআইও কার্যালয়ে নগদ টাকা থাকা নিয়ে প্রশ্নে ইউএনও বলেন, টাকার বিষয়ে ওই চার জনকে থানা ডাকা হয়েছে, বিষয়টি আমার জানা নেই।  এ বিষয়ে পিআইও'র সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ