গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে রাতের অন্ধকারে সড়ক সংস্কারে ব্যাপক অনিয়ম,যেন দেখার কেউ নেই
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে রাতের আঁধারে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়ক সংস্কার করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসি। সরেজমিন সংস্কারকাজ পর্যবেক্ষণ তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,উপজেলার ১নং কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ী বাজার এলাকায় উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে একটি সড়ক সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। এলাকাবাসির চোঁখকে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে ঠিকাদার বনাম নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গোপন যোগসাজসে রাতের আঁধারে নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার কাজ করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনি কন্ট্রাকশন। কোন জবাবদিহিতার তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদে এলাকাবাসি ক্ষোভে ফেঁটে পড়েছে। পলাশবাড়ী-কাশিয়াবাড়ী জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সাড়ে ৪ কি.মি. দীর্ঘ সংস্কার কাজে ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে ৭৩ লাখ টাকা। স্থানীয়রা জানায়,গত সোমবার দিনশেষে রাতে স্থানীয় লোকজন নির্মাণকাজ এলাকা থেকে সটকে পড়ে। এদিকে সুযোগবুঝে ঠিকাদারী সংস্থার জনবল রাতের আঁধারে কোনো রকম দায়সারাভাবে সম্পূর্ণ অনিয়মের ছত্রছায়ায় অবিরাম নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখার একপর্যায় পরদিন মঙ্গলবার সকালে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা নির্মাণকাজ স্থলে এসে নিম্নমানের কাজ প্রত্যক্ষ করেন।নিম্নমানের কাজ করা থেকে বারংবার সাবধানতা অবলম্বন ছাড়াও জবাবদিহিতার সতর্ক করা সত্বেও কোন তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীসহ বিটুমিন মিশানো মসলা দিয়ে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে কার্পেটিংয়ের কাজ অব্যাহত চালিয়ে যাচ্ছেন। রাত ভোর হতে না হতেই যেনতেন কার্পেটিং গুলো নিমিষেই উঠে যাচ্ছিল। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির নিয়োজিত জনবলের নিকট এমন বেহাল কাজের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক তারা জানান, কার্পেটিংয়ের মালামাল সমূহ অন্যত্র থেকে ট্রাকযোগে কর্মস্থলে আসার পথে কাকতালীয় সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে যায়। ফলে যথাস্থানে মালামাল পৌছঁতে অনেক বিলম্ব হয়। এ কারণে কার্পেটিংয়ের জন্য মিশ্রিত মসলা সমূহ জমে যায়।ফলে নির্দিষ্ট সময়ের কাজ সম্পন্ন করতে অপ্রত্যাশিত রাত গভীর হয়ে যায়। তবে কাজ চলাকালীন উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন এসময় সার্বক্ষণিক উপস্থিত ছিলেন। কাজের মান খারাপ হলে তা অবশ্যই পূনরায় সম্পন্ন করে নেয়া হবে বলে উপজেলা প্রকৌশলী তাহাজ্জদ হোসেন তার প্রতিক্রিয়ায় জানান। তিনি বলেন, কাজের সময় প্রকৌশলী কার্যালয়ের দায়িত্বশীল তদারকি কর্মকর্তা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কাজের মান খারাপ হয়েছে বলে আমি স্থানীয় লোকমুখে শুনেছি। এ কারণে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বুধবার সরেজমিন কাজের বাস্তবতা প্রত্যক্ষের পর যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।তাছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির নিকট সড়ক সংস্কারের কাজটি সঠিকভাবে বুঝিয়ে নিয়েই তবে তাদের ছাড়পত্র দেয়া হবে। বৃহস্পতিবার সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায় প্রকৌশলীর কাজ বন্ধের হুঙ্কারের বিষয়টি কোন কাজেই আসেনি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য প্রতিষ্ঠানটি পূর্বের ন্যায় নিম্নমানের কাজ অব্যাহত চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বয়ং উপজেলা প্রকৌশলী তাহাজ্জদ হোসেনের কাজ বন্ধের জরুরি নির্দেশনাকে রহস্যজনক বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যেনতেন মানহীন কাজ করছেন। নির্মাণ কাজ স্থগিত থাকার কথা থাকলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সন্ধায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির জনবল নির্মাণকাজ অব্যাহত চালিয়ে যেতে।