মৌসুম ছাড়াই দেশীয় আবহাওয়ায় কৃত্রিম পদ্ধতিতে আম ফলাতে সক্ষম হয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল গবেষক। এজন্য তারা প্রয়োগ করেছেন ‘ফোর্সিং’ পদ্ধতি। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে বছরের যেকোনো সময় যেকোনো জাতের আম গাছে আম ফলানো যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।এ সফলতা শেকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মারজিনা আক্তার রিমার।গবেষক মারজিনা আক্তার রিমা বাংলানিউজকে বলেন, থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা ‘ন্যামডকমাই’ জাতের ২৪টি আম গাছে ফোর্সিং পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট কয়েকটি হরমোন বিভিন্ন মাত্রায় পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। পরীক্ষায় কয়েকটি হরমোন নির্দিষ্ট মাত্রায় প্রয়োগ করার তিন মাসের মাথায় মুকুল আসে। স্বাভাবিক মৌসুমে আম গাছে যেমন মুকুল আসে মৌসুম ছাড়াই সেরকম মুকুল আনতে সক্ষম হই।ড. জামাল জানান, দেশে বারোমাসি ‘বারি১১’ জাতের আম অনেক আগে থেকে দেশে চাষ করা হয়। কিন্তু তা বছরে শুধু একবারই একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফল দেয়। তার স্বাদ মৌসুমী আমের তুলনায় ভিন্ন এবং ফলন অনেক কম। কিন্তু ‘ফোর্সিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে বছরের যেকোনো সময় ফল ধরানো যাবে। এর স্বাদ হবে মৌসুমী আমের মতোই। ফলনও সমান। ড. জামাল আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য এক নাগাড়ে সারা বছর না ফলিয়ে মৌসুম ছাড়া বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে আম ফলাবো। ফলে আম চাষিরা বাড়তি দাম পাবেন। আমরাও তুলনামূলক কম দামে আম খেতে পারবো। ‘অফ সিজনাল’ আমের বেশিরভাগ দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হয়। এর দামও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। চারশ থেকে পাঁচশ টাকা কেজি দরে ‘অফ সিজনাল’ আম কিনতে হয়।এ পদ্ধতিতে আম ফলানোর জন্য গাছের বাড়তি কোনো পরিচর্যা করতে হবে না। তবে হরমোন প্রয়োগের আগে গাছের মরা ডালপালা ছেঁটে দিতে হয়। গাছের ক্ষতিকর পোকামাকড় মেরে পানি স্প্রে করে পাতা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। আর হরমোন প্রয়োগ করতে হয় গাছের পাতা ও গোড়ার মাটিতে। হরমোন প্রয়োগের তিন মাসের মাথায় মুকুল আসে। ড. জামালের তত্ত্বাবধানে সাভারের কাশিমপুরের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএডিসি) দেশীয় বিভিন্ন জাতের আম গাছে এ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে। আগামী বছরের মধ্যে কৃষক পর্যায়ে প্রযুক্তিটি পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন গবেষকরা।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ