কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের খাসহাওলা গ্রামে নিজ বসত ঘর থেকে আপন ছোট ভাই ও তার পরিবারকে বের করে দেয়ায় খোলা আকাশের নীচে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে আগরপুর মসজিদের ইমাম জসিম উদ্দিন ও তার পরিবার । বর্তমানে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় বিচারের আশায় এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরণা দিয়েও সমাধান না পাওয়ায় ভৈরব থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে এমন অভিযোগ এনে আজ রোববার সকালে ভৈরব মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে জসিম উদ্দিন আরো জানান, ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া তার বাবার বসত ঘরটি তার বাবা তাকে ওসিয়ত করে দিয়ে গেছে। সেই ঘরে তিনি স্ত্রী ও ছোট ছোট সন্তানদেরকে নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত বসবাস করে আসছে। কিন্ত হঠাৎ করে তার বড় ভাই ওয়াসকরণী ঘরের অংশী দাবী করে এবং উক্ত ঘরটি তিনি নিজেই নাকি বেঁধে দিয়েছিলেন  । এতে আলাপ-আলোচনার পর ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তার ভাইকে ১০ হাজার টাকা দেয়ার রায় হয়। পরে কোন মতে অনেক কষ্ট করে টাকা ম্যানেজ করে চেয়ারম্যানের কথায় তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য মতি মিয়ার কাছে টাকা জমা দেয়া হয়। কিন্ত ওয়াসকরণী মতি মিয়ার কাছ থেকে টাকা না এনে গত ২৮ এপ্রিল শুক্রবার সকালে দলবল নিয়ে আমাকে মারধোর করে জোরপূর্বক বসত ঘর ভেঙে নিয়ে যায়। ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়াকে জানিয়ে ও কোন
প্রতিকার পায়নি । বর্তমানে আমি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নীচে জীবন- যাপন করছি। অর্থের অভাবে নতুন ঘর তলতে পারছিনা। আমি স্বল্প বেতনে কুলিয়ারচরের
আগরপুরে একটি মসজিদে ইমামতি করে যে বেতন পাই তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চলে। তাই বিষয়টি যেন সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রশাসন ও সরকারের উচ্চমহল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। এ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরটি ভেঙে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে তার বড় ভাই ওয়াসকরণী। বসত ঘর না থাকায় খোলা আকাশের নীচে জীবন-যাপন করছে জসিম উদ্দিনের পরিবার।
এ বিষয়ে তার বড় ভাই লিল মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘরটি পৈত্রিক সম্পত্তি। কিন্ত তার ভাই ওয়াসকরণীসহ সবাই তাকে থাকতে দিয়েছিলো। কিন্ত ভাইদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় ওয়াসকরণী ঘরটি ২৬ হাজার টাকা বিক্রি করে দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিবিশেী খোরশিদ মিয়া বলেন, ভাইদের সাথে দ্বন্ধের কারণে এ ঘটনা
ঘটেছে।তবে কাজটি অবশ্যই ন্যাক্কারজনক । তবে বড় ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চাইলে আমরা তাকে নতুন করে একটি ঘর করে দিবো। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওয়াসকরণী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,ঘরটি তার পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। ঘরটির মালিক তিনি নিজে। এতদিন তার ভাইকে তিনি থাকতে দিয়েছিলেন। এখন তার ঘর তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। 
এ বিষয়ে কালিকাপ্রসাদ ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়া জানান, মুফতি ওয়াসকরণীকে ঘর বাবদ ১০ হাজার টাকা দেয়ার জন্য তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য মতি মিয়ার কাছে জমা রাখা হয়। কিন্ত ওয়াসকরণী ওই টাকা না নিয়ে ঘরটি বিক্রি করে দেয়ায় পরিবারটি ঘর ছাড়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাদের ভাইদের সাথে কথা বলে দেখি সুরাহা করা যায় কি না।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ