প্রতিবেশীর সাথে ৩০ বছরের পুরাতন শত্রুতার জেরে পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যা শিশু নির্যাতন মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে সাতক্ষীরা কলারোয়ায় শেখ আব্দুল আহাদ আলী (৪৮) নামের এক যুবকের পরিবারকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী কবিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। আহাদ আলী উপজেলার ৯ নম্বর হেলাতলা ইউনিয়নের দামোদরকাটি শেখ পাড়া গ্রামের মৃত মোখসেদ আলীর ছেলে। সে পেশায়  পরিবহনের সুপারভাইজার।

মঙ্গলবার ২৬ এপ্রিল বিকালে দামোদরকাটি শেখ পাড়া এলাকায় তুচ্ছ একটি ঘটনা ঘটলেও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নানান কৌশল অবলম্বন করে রবিবার ১ মে সকালে প্রতিবেশী মৃত শেখ আলাল হকের ছেলে হলুদ ব্যবসায়ী কবিরুল ইসলাম (৫৮) বাদী হয়ে তার শিশু ছেলে ফরহাদ হোসেন (০৭) কে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করিয়া সাধারণ  হাড়ভাংগা জখম ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তুলে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকে ভুল তথ্য দিয়ে আহাদ আলীর বিরুদ্ধে কলারোয়া থানায় একটি ২/২০৩ নম্বর মামলা দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত আসামির ভাই শেখ আকবর আলী৷ এ ঘটনায় থানা পুলিশ আহাদ আলীকে গ্রেফতার করে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছেন।
রবিবার ৩ মে সরেজমিনে বাদীর বাড়ি ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, শিশু ফরহাদ হোসেন সকালে তার বন্ধুদের সঙ্গে দামোদরকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রধান সড়কের উপর সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে ছাতা হাতে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি খেলা করছে৷ শরীরের কোন জায়গায় ভাঙ্গেনি বা মারাত্মক জখম হয়নি এমনকি ব্যান্ডেজ বা প্লাস্টার লাগানো নেই৷ শিশুর সাথে কথা বল্লে সে সুস্থ ও স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন। 
ঘটনায় আটক হওয়া যুবক আহাদ আলীর ভাই শেখ আকবর আলী বলেন, মামলার বাদীর দুই শিশু ঘটনারদিন সকালে খেলা করার সময় ইটের টুকরো ছুড়াছুড়িতে নিজেরাই মারামারি করে এতে সে শি পাছায় আঘাত রক্ত জখমে আঘাত পাই৷ কিন্তু বিকেলে ভাই আহাদ আলীকে বাদীর ৭ বছরের ছোট ছেলে তুচ্ছ ঘটনায় মানহানি ও উত্যক্তকর কথা বল্লে তাকে বকাবকি করে হাত ধরে চেয়ারে বসিয়ে দিলে তাত্ক্ষণিক শিশু বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি আরও ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে বড় বিবাদ সৃষ্টি করে দুই পরিবারের মাঝে৷ শিশু ঘটনারদিন ও তার পরের দিন ও বাড়ি থেকে অর্ধ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বাচ্চাদের সাথে সুস্থ শরীরে ইফতারি করেছে৷ কিন্তু একান্ত আহাদ আলীকে ফাঁসাতে পরিকল্পিত ভাবে অভিনব কৌশল অবলম্বন করে ৩২৩ /৩২৫/ ৩০৭/ ৫০৬ চারটি ধারায় মামলা দায়ের করেছেন যা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত মিথ্যা ও বানোয়াট ভিত্তিহীন৷ ঘটনার পুনরায় তদন্ত ও মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে প্রশাসন ও জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 
এ ঘটনা প্রতিবেশী শেখ সাইদুল ইসলামের স্ত্রী সাথী খাতুন বলেন, পিতার বয়সী একজন গুরুজনকে ছোট্ট শিশু লোকজনের সামনেই মানহানিকর কথা বলায় বাচ্চা নিয়ে তাত্ক্ষণিক অতি তুচ্ছ ঘটনা ঘটেছিল৷ কিন্তু এটা নিয়ে মামলা মোকদ্দমা হওয়ার মতো গুরুতর কোনো ঘটনা না বরং তাত্ক্ষণিক মিমাংসাও হয়েছিল কিন্তু বাচ্চার অপরাধকে প্রশ্রয় দিয়ে ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরপরাধ মানুষকে মামলা দিয়ে ফাঁসানো উচিত হয়নি। 
সাবেক ইউপি সদস্য আসলাম আলী দুলাল বলেন, বাদী পক্ষরা বাচ্চা নিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রতিপক্ষকে মামলা মোকদ্দমায় ফাঁসিয়ে দিয়েছেন বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনার সত্যতা যাচাই করলে আসল রহস্য উদঘাটন হবে৷ নিরপরাধ যুবক যাতে আইনের সহায়তা পেয়ে কারাগার থেকে বেকসুর খালাস পায় এজন্য স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মামলার বাদী কবিরুল ইসলাম বলেন, শিশু ছেলে ফরহাদকে প্রতিবেশী হিংস্রভাবে বেধড়ক মারধর করে হাড়ভাংগা জখম করার ঘটনায় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুষ্ঠু বিচার পেতে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন৷
থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দীন মৃধা বলেন, শিশুকে বেধড়ক মারধর ও হাড়ভাংগা জখমের অভিযোগ তুলে গত ১ মে থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুর বাবা শেখ কবিরুল ইসলাম৷ এঘটনায় মামলার আসামি আহাদ আলীকে গ্রেফতার করে সাতক্ষীরা আদালতে পাঠানো হয়েছে৷

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ