ডেউয়া এক একটি গাছ ২০-২৫ ফুট লম্বা হয়। ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলুদ হয়। ফলে কাঁঠালের মতো ছোট ছোট কোষ থাকে। পাকা ফলের কোষের রং হয় লালচে হলুদ। ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়ামের আধার বলা হয় ডেউয়া ফলকে। এগুলো ছাড়াও ডেউয়া ফলে রয়েছে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। ডেউয়া ফলের খাদ্যযোগ্য প্রতি ১০০ গ্রাম অংশে রয়েছে খনিজ- ০.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৬৬ কিলোক্যালরি, আমিষ- ০.৭ গ্রাম, শর্করা- ১৩.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ৫০ মিলিগ্রাম, লৌহ- ০.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১- ০.০২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২- ০.১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি- ১৩৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম- ৩৪৮.৩৩ মিলিগ্রাম দেখতে অদ্ভুত এবং ভিন্ন স্বাদের ডেউয়া ফল মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। পাশাপাশি এর রয়েছে বেশ কিছু ভেষজ গুণও। যেমন- ১. যকৃতের নানা রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে ডেউয়া। ২. কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের কারণে পেটব্যথা কমাতে সহায়তা করে ফলটি। ৩. দীর্ঘদিন অসুখে ভুগলে খাবারে রুচি থাকে না। রুচি ফিরিয়ে আনতে ডেউয়ার রস লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দুপুরে ভাত খাবার আগে খেতে উপকার হয়। ৪. গাছের ছালের গুঁড়া ত্বকের রুক্ষতা দূর করে এবং ব্রণের দূষিত পদার্থ (পুঁজ) বের করে দেয়। ৫. ডেউয়ার ভিটামিন-সি ত্বক, চুল, নখ, দাঁত ও মাড়ি নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ৬. এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধ প্রতিরোধ করে। ৭. ডেউয়াতে বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্ত চলাচলে সহায়তা করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ৮. ডেউয়া ওজন কমাতে সাহায্য করে। এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ পাকা ডেউয়ার রসের সাথে বাকি তিন ভাগ কুসুম কুসুম গরম পানি মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে উপকার হয়। ডেউয়া সব মৌসুমে পাওয়া যায় না। তাই পাকা ডেউয়া শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন। শুকনো ডেউয়া পরবর্তীতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারবেন। 

কিছু কথা

--------------

ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল বলতে আমরা আপেল, আঙ্গুর, কমলার মতো দামী বিদেশি ফলকে বুঝি কিন্তু এই ফলগুলো বিদেশ থেকে আমদানীকৃত ও বিক্রেতার হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে কমপক্ষে ২০/২৫ দিন সময় লাগে। এতদিনে ফল নষ্ট না হওয়ার কারণ এতে অতিমাত্রায় কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অথচ আমাদের দেশে ভিটামিন সমৃদ্ধ ফলের অভাব নেই। বাড়ীর পাশের পতিত জমিতে দেশি ফলের গাছ লাগিয়ে একটু যত্ন নিলেই ভেজালমুক্ত নিরাপদ ফল স্ব-পরিবারে খেতে পারি। তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের দয়ারপাড়া ঠুটিয়াপাকুর এর নিবিড় ক্যান্সার হেলথ এন্ড এডুকেশন সোসাইটি (গভঃ রেজিস্ট্রেশন রাজ-৪০৮/১৬)র নির্বাহী পরিচালক মোঃ আব্দল্যা আল মামুন।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ