একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাখিল করা ৬১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের মধ্যে ১৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। রোববার যাচাই-বাছাই শেষে রিটানিং কর্মকর্তা রাব্বী মিয়া এ ঘোষণা দেন। এতে জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৭ জন। বিভিন্ন মামলায় আদালত থেকে দন্ডপ্রাপ্ত হওয়া, ঋণ ও বিল খেলাপি, মামলা সংক্রান্ত সার্টিফায়েড কপি ও আয়কর সনদ না থাকা, ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকা এবং অসম্পূর্ণ হলফনামাসহ আরো কয়েকটি কারণে এসব মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা।তবে নিয়মানুযায়ী, যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা ৩-৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করতে পারবেন। শুনানি চলবে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আপিলে যদি মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে, সেক্ষেত্রে প্রার্থীরা আদালতে আপিল করতে পারবেন।মনোনয়নপত্র বাতিল হলো যাদের : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ১৬ প্রার্থীর মধ্যে ১১ প্রাথীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের মনোনয়নপত্রে অসম্পূর্ণ হলফনামা, বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ঋণখেলাপী হওয়ায়, তাঁর ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মুহাম্মদ কায়সার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এছাড়া আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউসার আহমেদ পলাশের মনোনয়নপত্রে মামলা সংক্রান্ত সার্টিফায়েড কপি না থাকায়, জাতীয় পার্টির মো.ছালাউদ্দিন খোকা মনোনয়নপত্রে অসম্পূর্ণ হলফনামা থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেয় রিটার্নিং কর্মকর্তা।নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ১৫ প্রার্থীর মধ্যে ১০ প্রাথীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম,  বিএনএফ এর মো.সাহাব উদ্দিন হোসেন ভূইয়ার অসম্পূর্ণ হলফনামা, গণফ্রন্টের প্রার্থী মো.সিরাজুল ইসলাম ঋণখেলাপী হওয়ায়, জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী অনন্যা হোসাইন মৌসুমী ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোশারফ হোসেনের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। 
নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ১২ প্রার্থীর মধ্যে ১১ প্রাথীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ আসনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ঋণখেলাপী হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ১০ প্রার্থীর মধ্যে ৮ প্রাথীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেহান আফজালের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় এবং জাকের পার্টির মাহফুজুর রহমানের আয়কর সনদ না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা ৮ প্রার্থীর মধ্যে ৭ প্রাথীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মো.আবু হানিফ হৃদয়ের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।মনোনয়নপত্র বৈধ হলো যাদের : নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মো.ইমদাদুল্লাহ, বিএনপির কাজী মনিরুজ্জামান, তৈমূর আলম খন্দকার, মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া, জাতীয় পার্টির মো.আজম খান, আওয়ামীলীগের গোলাম দস্তগীর গাজী, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট প্রার্থীর মো.মনিরুজ্জামান চন্দন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো.হাবিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির মো.হাফিজুল ইসলাম, বিএনপির মো.নজরুল ইসলাম আজাদ, মো.আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, মাহমুদুর রহমান সুমন এবং জাকের পার্টির মো.মুরাদ হোসেন জামালের মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (বিটএফ) এর মো.মজিবুর রহমান, বিএনপির আজহারুল ইসলাম মান্নান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মাওলানা মো.ছানাউল্লাহ নূরী, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির আঃ সালাম বাবুল, জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকা, আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির এএনএম ফখর উদ্দিন ইব্রাহিম, জাকের পার্টির মোস্তফা আমীর ফয়সল, মো. মুরাদ হোসেন জামাল এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো.রাশেদ ফেরদৌসের মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে ঘোষণা করে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির হিমাংশু সাহা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ-ন্যাপ এর মো.ওয়াজি উল্লাহ মাতব্বর অজু, মো.শাহ আলম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মো.শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহমুদ হোসেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ মনির হোসেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সেলিম মাহমুদ, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো.জসীম উদ্দিন, আওয়ামীলীগের শামীম ওসমানের মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার।নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাজী মো.আবুল কালাম, খেলাফত মজলিস এর হাফেজ মো.কবির হোসেন, বিএনপির হয়ে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, এস.এম আকরাম,সাইদ আহম্মেদ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদী, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি বাংলাদেশের মন্টু চন্দ্র ঘোষ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো.আল আফতাব, জাকের পার্টির মোর্শেদ হাসান, জাতীয় পার্টির একেএম সেলিম ওসমানের মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার।প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর; আর প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ ডিসেম্বর। আর ভোট ৩০ ডিসেম্বর।

 

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ