গাকৃবিতে আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) “আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ” বিষয়ে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলনের পর ক্ষতি কমানো, রপ্তানীর সম্ভাবনা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ও জ্ঞানের বিস্তার, কৃষি শিল্পায়নে অবদান সর্বোপরি উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এ প্রশিক্ষণের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বিশেষ এ প্রশিক্ষণটি আজ ২৩ জুন (মঙ্গলবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাঙ্গন কার্যক্রমের উদ্যোগে সকাল ১১টায় ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্সের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণে সভাপতিত্ব করেন পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিন। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন গাকৃবি'র উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ। অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষক হিসেবে আমসত্ত্ব ও আমের রেডি টু ড্রিংক তৈরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিন এবং আমের জ্যাম ও জেলি তৈরির পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন গাকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ আজিজুল হক। প্রশিক্ষণে গাজীপুরের কাউলতিয়া, সদর এবং জয়দেবপুর থেকে আগত ১০ জন উদ্যোক্তা, কাউলতিয়া থেকে আগত ১০ জন কৃষক এবং অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন এমএস ও ১০ জন বিএস শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষকদ্বয় আমের নানাবিধ উপকরণ তৈরির পদ্ধতি, পুষ্টিগুণ এবং ব্যবহারিক উপকারিতা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সচিত্র তথ্য উপস্থাপন করেন যা প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে প্রাথমিক ধারণা তৈরি এবং আগ্রহ উদ্দীপনার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ সময় শামীম আল মামুন নামে একজন উদ্যোক্তা বলেন, "আজকে যে বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলাম তা যথাযথ অনুসরণ করে আম থেকে তৈরি বিবিধ প্রোডাক্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে দিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে একজন বড় উদ্যোক্তা হবার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এরপর সমাপনী অংশে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, "বাংলাদেশ আম উৎপাদনে একটি সম্ভাবনাময় দেশ। কিন্তু প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ আম যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। এ ধরনের প্রশিক্ষণ এই সমস্যার টেকসই সমাধানে অবদান রাখবে।” উপাচার্য আরো বলেন, "আমরা যদি তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তবে তারা শুধু নিজেদের জীবিকা নিশ্চিত করবে না, বরং কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করবে।" এক্ষেত্রে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু শিক্ষা ও গবেষণায় সীমাবদ্ধ না রেখে মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারিকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন উপাচার্য। অন্যদিকে এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা আমের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণের নতুন দিগন্তে প্রবেশ করে সকলের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ একটি টেকসই কৃষি অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা উপস্থিত সকলের। সহযোগী পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. মোঃ মামুনুর রহমান এর সঞ্চালনায় সভাপতি প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিনের সমাপনী বক্তব্যের মধ্যদিয়ে প্রশিক্ষণের সমাপ্তি ঘটে।