কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের সবাই ফেল
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সালের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) শেষ পর্বের ফল প্রকাশ হয়েছে ৪ জুন। এতে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৯০ জন পরীক্ষার্থীর সবাই অকৃতকার্য হয়েছে। এই ঘটনার জন্য ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল বোর্ডে পাঠানোর সময় কারিগরি ত্রুটিকে দায়ী করে দুঃখ প্রকাশ করে দ্রুতই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এটাকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সালের মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষা শুরু হয় চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি। দুটি গ্রুপে ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয় ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ এপ্রিল। এরপর ৪ জুন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের পরীক্ষার্থীরা সবাই অকৃতকার্য। শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানতে পারেন, তাঁদের ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে না পাঠানোর কারণে তাঁরা সবাই ফেল করেছেন।
অকৃতকার্য হওয়া রসায়ন বিভাগের পরীক্ষার্থী তাসকিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফলাফল প্রকাশের পর আমরা সবাই ভেঙে পড়েছিলাম। এরপর বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হলে জানতে পারি, কারিগরি ত্রুটির কারণে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কলেজ থেকে বোর্ডে না যাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
আসিফ মাহমুদ প্রান্ত নামের রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা কখনো চাই না শিক্ষকদের গড়িমসির কারণে কোনো শিক্ষার্থী এমন পরিস্থিতির শিকার হোক। তাঁদের ভুল হলো রেজাল্ট পাঠিয়ে রি-চেক না করা। সার্ভার ডাউন থাকার কারণে ফাইলটা সেন্ড হয়নি বলে স্যারেরা আমাদের জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রসায়ন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. রোকনুজ্জামান সত্যতা নিশ্চত করে বলেন, ‘আমাদের অসতকর্তার কারণেই ভুল হয়েছে। রেজাল্ট অনলাইনে সাবিমট করা হয়েছিল। কিন্তু সার্ভার ডাউন থাকার কারণে সাবমিট হয়নি। রি-চেক না করার কারণে বিষয়টি নজরে আসেনি। অনলাইনে সাবমিট না হওয়ার কারণে ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে ম্যানুয়ালি রেজাল্ট শিট পাঠানো হয়েছে। আমাদের এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় আশ্বস্ত করেছে।’
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমীন বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পরেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি, বিষয়টি দ্রতই নিস্পত্তি হয়ে যাবে।’ এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা থাকলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সারা দেশের ১৮০টি কলেজের ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫৯১ জন পরীক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২২ সালের মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৯ জন।