শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্যানিটারি ভেন্ডিং মেশিন: ডাসারে নতুন উদ্যোগ”
মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায় কিশোরী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে প্রথমবারের মতো চারটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গৃহীত এই কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বস্তি ও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। রবিবার (১ জুন) সকালে ডাসার উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল আলম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফ-উল- আরেফীন। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শিবলী রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো কিশোরী মেয়েদের মধ্যে ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেকেই সামাজিক সংকোচ, অজ্ঞতা কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার অভাবে প্রয়োজনীয় স্যানিটারি সামগ্রী ব্যবহার থেকে বিরত থাকে। এই উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থেকেই সহজে স্বাস্থ্যসম্মত ন্যাপকিন সংগ্রহ করতে পারবে, যা একদিকে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াবে, অন্যদিকে বিদ্যালয়ে তাদের উপস্থিতির হারও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ-উল-আরেফীন বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। প্রথম ধাপে চারটি বিদ্যালয়ে ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বিদ্যালয়ে এই সেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. শিবলী রহমান জানান, “এই উদ্যোগ শুধুমাত্র একটি যান্ত্রিক স্থাপন নয়, এটি একটি সামাজিক সচেতনতামূলক পদক্ষেপ। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করা, খোলামেলা আলোচনা ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহজলভ্য করাই এর মূল লক্ষ্য।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের অনেক সময় ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ প্রয়োজন হয়, তখন সংকোচে কাউকে কিছু বলা যায় না। এখন এই মেশিন থাকায় সহজে ন্যাপকিন নিতে পারব। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সুবিধা।”এই উদ্যোগ নারী স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের আত্মবিশ্বাস ও শিক্ষাজীবনে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেও সহায়ক হবে বলে মনে করছেন অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দ।