বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে, নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ডিমলা উপজেলা। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে ''তুহিন ভাইয়ের সমর্থক গোষ্ঠী'' ব্যানারে ডিমলা মডেল মসজিদের সামনে থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শুটিবাড়ি-ডিমলা মোড়ের স্মৃতি অম্লানের সামনে গিয়ে শেষ হয়।ইউনিয়ন পর্যায়ের কয়েক হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ''আলহাজ্ব অধ্যাপক রইছুল আলম চৌধুরী'' এবং সাবেক সদস্য মহিলা দল কেন্দ্রীয় সংসদ ও উপজেলা মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী ''অধ্যাপিকা সেতারা সুলতানা'' নেতৃত্ব দেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুজ্জামান বিঞ্জু, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আশিক উল ইসলাম লেমন, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব হালিমুল হোসেন রাসেলসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। তারা অভিযোগ করেন, ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীন এবং বর্তমান ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বক্তারা আরও বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের রোষানলে পড়ে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন দীর্ঘ ১৮ বছর বিদেশে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন।

নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, প্রয়োজনে গণআন্দোলনের মাধ্যমে তাদের প্রিয় নেতা তুহিনের মুক্তি নিশ্চিত করা হবে। তারা আরও বলেন, তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যে নীলফামারীসহ বৃহত্তর রংপুর বিভাগে আন্দোলনের লেলিহান শিখা জ্বলে উঠেছে এবং দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর রংপুর বিভাগে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন ঢাকার পৃথক দুটি বিশেষ জজ আদালতে তার আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন। প্রথমে কর ফাঁকির মামলায় জামিন শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর কিছুক্ষণ পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারকও তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা যায়, কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দুটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কর ফাঁকির মামলায় ২০০৮ সালে আদালত তাকে দুটি ধারায় মোট আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন, যা একত্রে পাঁচ বছর হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তাকে ২০০৮ সালে তড়িঘড়ি করে আদালতকে প্রভাবিত করে অর্থদণ্ডসহ ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর পর তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ