দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক আবেদ আলী এখন শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
একটি সুত্র জানায় পারিবারিক ভাবে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় জীবিকা নির্বাহের তাগিদে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের বাসায় লজিং মাস্টার হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি পড়ালেখা করতেন আবেদ আলী।
২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের  সুপারিশে আবেদ আলীকে শিক্ষা বোর্ডেই মাষ্টার রোলে পিয়ন পদে চাকুরী দেন। ২০১০ সালে চাকুরি স্থায়ী হওয়ার পর ২০১৩ সালে পদোন্নতি পেয়ে প্রথমে সেকশন অফিসার পরবর্তী সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। 

সুত্রটি আরো জানায় আবেদ আলী আ'লীগের আস্হাভাজন আশির্বাদ পুষ্ট হওয়ায় বোর্ডে তার সব কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ প্রভাব বিস্তার শুরু করে। সামান্য কর্মচারী থেকে সময়ের পরিক্রমায় বদলে যায় তার জীবনমান।
 গত ১৬ বছরের ধরে তার নিজস্ব বলয়ে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে শিক্ষা বোর্ডে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে। এডক কমিটি -অনুমোদন, স্বীকৃতি নবায়ন, একাডেমিক পাঠ দান অনুমোদন, টেন্ডার  কমিশন, পুরাতন কাগজ নামমাত্র মূল্যে  বিক্রি. বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য, পদোন্নতি, প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ফান্ডের অর্থ লুটপাট করে বোর্ডের পাশেই এ-এস ব্রিক্স নামক দুটি ইটভাটার পাশাপাশি তার বড় দুলাভাইয়ের নামে, পাহাড়পুর এলাকায় দুটি বিলাস বহুল রাজপ্রাসাদ সমতুল্য ভবন নির্মাণ করেছেন, বিরল উপজেলার কালিয়াগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ৩ হাজার লিচু গাছ আট একর জমিসহ প্রায় ২০ টি ট্রাংক টলি ক্রয় করেছে।
সহায়-সম্পদ বলতে আবেদের কিছুই ছিল না।  গত ১৬ বছরে শূন্য থেকে আবেদ বনে যাওয়া শত কোটি টাকার মালিকের পাশাপাশি আলিশান গাড়ি, রাজকীয় বাড়িসহ অঢেল সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। ২০১৬ সালে গেয়াত আয়ের বহির্ভূত সম্পদ অর্জন তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় দুদক একটি  মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন ডাকা হেভ অফিসের বরাবরে প্রেরণ করে। প্রতিবেদন থেকে  নিজের নাম বাদ দিতে তত্কালীন দিনাজপুর ৫ আসনের সাংসদ সদস্য মোস্তাফিজার এমপির এপিএস দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সাধারন সম্পাদক মির্জা আশফাকের সহযোগিতায় প্রতিবেদনের তালিকা থেকে আবেদর নাম বাদ পড়ে । কিছুদিন পর চালাক চতুর আবেদ  নিজের সকল সম্পত্তি ভাই ভাবীর সহ আত্মীয় স্বজনদের নামে রেখে নিজে সাজেন সাধু সন্ন্যাসী। এর পর থেকে বোবা ও বধিরত্ব দায়িত্ব পালন করছেন দুদক কর্মকর্তারা। 
৫ আগষ্টে আওয়ামীগ সরকার পতন হওয়ার পর  মামলা থেকে রেহাই পেতে খোলস পাল্টিয়ে মোটা অংকের টাকা ডোনেশন দিয়ে রাতারাতি হয়ে যান বিএনপি আস্থাবান ব্যক্তি।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক আবেদ আলীর সম্পর্কে তার সহকর্মী জানান চাকরি হওয়ার পর থেকে আবেদের বিস্ময়কর উত্থান যেন আরব্য উপন্যাসের আলাদিনের চেরাগের কেরামতিকেও হার মানায়।
এব্যাপারে আবেদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে শিক্ষাবোর্ডে চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম প্রতিনিধিকে বলেন আমি সদ্য যোগদান করেছি এসকল বিষয় কোন মন্তব্য করা সম্ভব না।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ