ভূমি দখল, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত শরীয়তপুর পৌরসভার তিন কাউন্সিলর
শরীয়তপুর পৌরসভার তিন কাউন্সিলর, হত্যা' ধর্ষণ' মাদক ব্যবসা' ভুমি দখল, অপহরণ, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন সরকারী দফতরে টেন্ডারবাজী, সন্ত্রাসসহ জেলার সবধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রন করে, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাচ্চু বেপারী,৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ শেখ ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বেপারীসহ তাদের আত্বীয়-স্বজনরা মিলে কামিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
আওয়ামীলীগের গত ১৬ বছর ধরে, শরীয়তপুর সদর ১ আসনের আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি বিএম মোজাম্মেল হক ও সাবেক এমপি ইকবাল হোসেন অপুর ছত্রছায়ায় থেকে অপরাধ করে আসছে। পুলিশ সাংবাদিকসহ কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনিই কথা বলতে পারেনি বাচ্চুর বিরুদ্ধে। বাচ্চু বেপারীর ভুমিদস্যুতা, চাঁদাবাজী,খুনসহ সবধরনের অপরাধের সেকেন্ড ইন্ড কমান্ড ছিলো তার ছোট ভাই চুন্নু বেপারী ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বেপারী। এছাড়া মাদক ব্যবসা ও টেন্ডারবাজীর দায়িত্ব ছিলো ফরিদ শেখের হাতে। আধিপত্য বজায় রাখতে সদর পৌরসভা আওয়ামীগ নেতা আঃ মান্নানকে খুন করে বাচ্চু বেপারী ও শ্রমিক নেতা ফারুক চকিদারের নেতৃত্বে।
শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা ব্যবসা শুরুর আগে বাচ্চু বেপারীর ভয়ে চাঁদার টাকা তার ভাই চুন্নুর মাধ্যমে জমা দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হতো। এই বাচ্চু বেপারীর সন্ত্রাসের হাত থেকে সাংবাদিক, পুলিশ নিজ দলীয় ও বিরোধী দলীয় নেতা, সরকারী অফিসার, ঠিকাদার কেউই রক্ষা পায়নি। তার কোন কাজে কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেই তাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো তার দখলকৃত জায়গা রাজগঞ্জ ব্রিজের কাছে ক্লাবের রিমান্ড সেলে, সেখানে নিয়ে তাদের উপর করা হতো নির্মম নির্যাতন।এই বাচ্চু আন্তঃজেলা বাস স্টান্ডে বাস পরিস্কারের কাজ করতো, সেখান থেকে ২০০৯সালে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএম মোজাম্মেল এমপি ও ইকবাল হোসেন অপুর ছত্রছায়ায় হয়ে উঠে ভয়ংকর সন্ত্রাসী, গড়ে তোলে মাদক ব্যবসা ও মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেট, এরপর ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মির্বাচিত হওয়ার পর, আর তাকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি,গড়ে তোলে একের পর এক চাঁদাবাজী, ভুমিদস্যুতা, টেন্ডারবাজী,অপহরণ, খুনসহ নতুন নতুন সিন্ডিকেট। এভাবে সে গড়ে তোলে বিশাল সাম্রাজ্য, তার রয়েছে প্যারাডোসহ একাধিক দামি দামি গাড়ি।এদিকে ফরিদ শেখ টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ থেকে উঠে এসে বাচ্চু বেপারী মাদক ব্যবসা সামলাতে গিয়ে টাকার গরমে হয়ে উঠে আওয়ামীলীগ নেতা।শরীয়তপুর মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় মাদক পাচার করে হয়ে রাতারাতি বনে যায় কোটি কোটি টাকা, গাড়ি-বাড়ি মালিক, টাকার গরমে ফরিদ শেখ নির্বাচিত হয় পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। এরপর সেও ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে।৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বেপারী মাদ্রাসায় পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ বাবার হাঁড়ি পাতিলের ফেরিওয়ালার কাজ করে সংসার চলতো, সেখান থেকে সন্ত্রাসী বাচ্চুর সংস্পর্শে এসে হয়ে উঠে ভয়ংকর সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ ভূমিদস্যু। এভাবে গত একযুগে জাহাঙ্গীর ও তার বাহিনী হাতিয়ে নেয় শত শত কোটি টাকা। টাকার গরমে সেও নির্বাচিত হয় পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর হয়ে উঠে আরও বে-পরোয়া ভয়ংকর সন্ত্রাসী, এরপর দখলে নেয় একের পর এক সরকারী ও হিন্দুদের জমি, নিয়ন্ত্রনে নেয় অপহরণ, চাঁদাবাজী। তার সহযোগী হিসাবে কাজ করতো ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর চকিদার, জাহাঙ্গীর চকিদার ও রিপন।
বাচ্চু বেপারীর সন্ত্রাসী বাহিনীতে প্রায় ৫০০ সক্রিয় আগ্নেয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রয়েছে।
বাচ্চু বেপারী জমিসহ অন্যেন্য ব্যবসার কথা বলে যেসব লোকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে, তাদের মধ্যে অনেকেই দূর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে বাচ্চু ও তার সহযোগীদের নামে একাধীক লিখিত অভিযোগ করেন,
অভিযোগের সূত্র ধরে দূর্নীতি দমন কমিশনও অনুসন্ধান করে তার বাহিনির হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদের খোঁজ পেয়েছেন এবং তারা মামলা প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানা গেছে।