বগুড়ার শেরপুরে গত বছর আলুর দাম বেশি পাওয়ায় এ বছরও প্রচুর চাষি ঝুঁকেছে আলু চাষের প্রতি। কিন্তু বীজের দাম বৃদ্ধি এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত তারা।  বুধবার (১৩ ডিসেম্বর)উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মোটামুটি ভাবে আলু চাষের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন শুধু জমিতে যত্ন নেবার পালা। শুরু থেকেই শেরপুরে সিন্ডিকেটের কব্জায় ছিলো আলু বীজ। কৃষকদের জিম্মি করে অসাধু ব্যবসায়ী ও ডিলারদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয় করেছে। নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি বস্তা বীজ আলু ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি নিয়ে বিক্রি করেছেন বলে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। সরকারি, বেসরকারি এবং কৃষক পর্যায়ে তিন ক্ষেত্রেই বেড়েছে আলু বীজের দাম। এবার প্রতি কেজি আলুর বীজ সরকারি ভাবে ৪৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে জাতভেদে ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সার, কীটনাশক, হাল চাষ এবং শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় প্রতি হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন খরচ বেশি হবে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এর আগে সরকারি যেসব কোম্পানিগুলো বীজ আলু বিক্রি করতো ৪৫ টাকায় এবার তাদেরকে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। পরিবহন খরচ এবং ডিলারদের অন্যান্য খরচ মিলিয়ে উৎপাদন মূল্য বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেরপুর উপজেলায় এবার ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এর মধ্যে ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করা হচ্ছে। এই ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করতে আলুর বীজের প্রয়োজন হবে ৪৫০০ মেট্রিক টন। কৃষিবিভাগ সূত্রে জানা যায় শেরপুর উপজেলায় বিএডিসির বীজ আলুর বরাদ্ধ  চাহিদার মাত্র পাঁচ শতাংশ আর পাঁচ শতাংশ পূরণ করে ব্র্যাক।  

সরকারি বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে  চাহিদার মাত্র ২৫%-৩০% বীজ আলু হিমাগারে  সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। বাকি ৫৫%-৬০℅ বীজ আলু কৃষকরা নিজেরাই বাড়িতে সংরক্ষণ করে। 
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের আলু বীজ বিভাগ সারাদেশে সমন্বয় করে জেলাভিত্তিক আলু বীজ বরাদ্দ করে থাকে। ডিলারদের মাধ্যমে বিপণন করে থাকে। গত বছর সরকারি ভাবে ডিলারদের মধ্যে বিজ আলু সরবরাহ করা হয়েছিল প্রতি কেজি ২৭ থেকে ৩০ টাকায় আর কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছিল প্রতি কেজি ২৮ থেকে ৩৩.৭৫ পয়সা। কিন্তু এবছর সেই আলু ডিলারদের পর্যায়ে সরবরাহ মূল্য করা হয়েছে প্রতি কেজি ৪৭-৫২টাকা। আর কৃষক পর্যায়ে  ৪৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বা ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি কেজি। প্রতি কেজি আলু বীজের মূল্য জাত ভেদে বৃদ্ধি করা হয়েছে ২০ টাকা থেকে ২৪ টাকা।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা আক্তার বলেন আলু বপন মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। এখন যত্ন নেবার পালা আবহাওয়া ভালো থাকলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে। শেরপুর উপজেলায় চাহিদার কত পার্সেন্ট বীজ আলু বিএডিসি সরবরাহ করে জানতে চাইলে পরে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ