নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বাদে পুটিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অবৈধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে জনবল নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করার দাবিতে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্ব) সকালে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক মো: বাদশা মিয়া তালুকদার। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বাদেপুটিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা রবিবার দুপুরে তরিগরি করে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনেক আবেদন কারী অভিযোগ করে বলছেন পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত হলেও তাদের জানানো হয়নি। এমনকি তারা পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য প্রবেশপত্র পাননি।বিদ্যালয়ের সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে এ নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে এমন অভিযোগ আবেদন কারী অনেকের। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবকদের প্রশ্ন এই বিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অবসর নেওয়ার কয়েকদিন পরেই নির্বাচন বিহীন রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হয়েই নিয়োগ কার্যক্রম চালানোর পায়তারা শুরু করেছেন। এব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুল বাসার খান, বলেন বোর্ড গঠন ছাড়াই কমিটির সদস্যদের বাদ দিয়েই সভাপতি ও অবৈধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক টাকার বিনিময়ে ৫ টি পদে নিয়োগ দিচ্ছে। যা নিয়োগ বানিজ্যের বাজার দর ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা নির্ধারিত হয়েছে বলেও জানান তিনি। গত ২২ জুলাই ২০২৩ তারিখে একজন প্রধান শিক্ষক, একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক, একজন কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, একজন নিরপত্তা পরিচ্ছন্ন কর্মী ও একজন আয়া পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে মর্মে পুনঃ বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। একই পদে তার আগেও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছিল। দূর্নীতির দেয়াল ডিঙিয়ে প্রথম বার নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে না পারলেও পুনঃ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন গ্রহন করে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছে। যা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। আয়া পদে আবেদন কারী একজন জানান, তাকে প্রথমবার নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে আস্বস্ত করলেও পুনঃ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর তাকে আর পাত্তাই দেওয়া হচ্ছেনা। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ এর ব্যপারেও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। সিনিয়রকে বাদ দিয়ে জুনিয়রকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে শুধু জনবল নিয়োগকে টার্গেট করে। এব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের একজন জেষ্ঠ্য শিক্ষক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ময়মনসিংহ বরাবর অভিযোগ দাখিল করলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জেষ্ঠ্যতা অনুসারে কমিটি বরাবর দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা তোয়াক্কা না বহাল তবিয়তে নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি যাকে অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনি চলতি মাসের ২৯ তারিখে অবসরে চলে যাবেন বিধায় তরিগরি করে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে যাচ্ছেন বলেও কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান জানিয়েছেন। 

এব্যাপারে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ জানান, পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ আমাকে একটি প্রভাবশালী মহল ব্ল্যাকমেইল করে নিয়োগ কার্যক্রম চালানোর জন্য বাধ্য করছে, তাই আমি অসহায়। 
এব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়ম বা দূর্নীতির ব্যাপারে আমি কোন অভিযোগ পাইনি বা জানিনা। তবে আজ রবিবার বিকেলে অভিযোগের কাগজ নিয়ে গেলে সমস্ত কাগজ তিনি ছুড়ে ফেলে দেন। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমি দেখছি।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ