কুষ্টিয়ায় কাঙ্গাল হরিনাথের ব্যবহৃত ছাপাখানা জাদুঘরে স্থানান্তর
মফস্বল সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদারের ব্যবহৃত ও দেশের প্রথম ঐতিহাসিক এম এন ছাপাখানাটি তাঁর বাড়ি থেকে অবশেষে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁর ১৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কাঙ্গাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরে ছাপাখানাটি উন্মুক্ত করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ। পরে বিকেলে হরিনাথের জন্মদিন উপলক্ষে জাদুঘরের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও কবিতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউএনও বিতান কুমার মণ্ডল।
জাদুঘরের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ওবাইদুল্লাহর সভাপতিত্বে ছাপাখানা উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কাঙ্গাল হরিনাথের চতুর্থ বংশধর অশোক মজুমদারের স্ত্রী গীতা মজুমদার, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি হারুন অর রশিদ, খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাছুম মুর্শেদ শান্ত, কাঙ্গাল হরিনাথ প্রেস ক্লাবের সভাপতি কে এম আর শাহিন প্রমুখ।
ছাপাখানাটি জাদুঘরে হস্তান্তরে গত শনিবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০ লাখ টাকার চেক ও দু’জনের চাকরির বিনিময়ে ছাপাখানাটি জাদুঘরে হস্তান্তর করা হবে। চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক কামরুজ্জামান ও গীতা মজুমদার। পরে ছাপাখানাটি খণ্ড খণ্ড আকারে গত মঙ্গলবার বাস্তুভিটা কুণ্ডুপাড়া থেকে কুমারখালী কাঙ্গাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরে স্থানান্তর করা হয়।
সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ বলেন, অনাগত প্রজন্মের কাছে কাঙ্গাল হরিনাথের ছাপাখানাটি কুমারখালীর ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করবে। গীতা মজুমদার বলেন, অবশেষে প্রেসটির একটা ব্যবস্থা হয়েছে। হরিনাথের অরক্ষিত সমাধি ও বাস্তুভিটা সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।
কাঙ্গাল হরিনাথ ১৮৩৩ সালে কুমারখালী উপজেলার কুণ্ডুপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। অত্যাচারিত কৃষক সম্প্রদায়কে রক্ষায় তিনি সাংবাদিকতা পেশা গ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় লিখতেন, পরে ১৮৬৩ সালে তিনি নিজেই ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি ১৮৭৩ সালে ছাপাখানাটি স্থাপন করেন। কিন্তু ইংরেজ সরকার পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়।