দিনাজপুরের কোতয়ালী থানাধীন ফজলুল কবির টুটুলের ফার্ম থেকে গভীররাতে ১৪ টি গরু ডাকাতরা নিয়ে যায়। পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ডাকাতদের গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ।গত ১৮ মার্চ রাত অনুমান পোন ৪ টার দিকে ওই ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।এ ঘটনায় দিনাজপুর কোতয়ালী থানা একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্লুলেস ডাকাতি ঘটনা উৎঘাটন ও ডাকাত চক্রকে সনাক্ত ৫ ডাকাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ পিপিএম'র নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), মমিনুল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) আব্দুল্লাহ আল-মাসুম এর সমন্বিত পরিকল্পনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্নাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক তানভিরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা শাহ এবং তদন্তকারী অফিসার এসআই ইন্দ্র মোহন রায়ের সাথে বিশেষ টিমের সদস্য এসআই শামীম, এসআই সাইদুল ইসলাম, এএসআই জুয়েল রানাসহ আরো অনেকে অত্র ঠাকুরগাঁও এবং নীলফামারী জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ ঝটিকা অভিযান শুরু করেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্লুলেস ডাকাতি ঘটনা উৎঘাটন ও ডাকাত চক্রকে সনাক্ত করা হয়। আত্বগোপনে থাকা ডাকাতদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযানে ২৯ মে মার্চ ৩ জন  এবং ১৩ মে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার লতিফপুরসহ কয়েকটি জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে চোরাই কাজে ব্যবহৃত ট্রাকসহ ২ জন ডাকাতসহ মোট ৫ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কোতয়ালী থানার পুলিশ।গ্রেফতারকৃতরা গরু ডাকাতির সাথে জড়িত ছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।দিনাজপুরের কোতয়ালী থানার দক্ষিন রামনগর (মোলানপুকুর) গ্রামের শরিফুল ইসলাম ওরফে বাংরুর ছেলে ডাকাত ফরিদুল ইসলাম ওরফে ফরিদ (৩৫) এর বিরুদ্ধে  দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় ৫ টি এবং ঠাকুরগাঁও এ ০১ টি চুরি, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট ৬ টি মামলা রয়েছে এবং ১৩ টি গ্রফতারী পরোয়ানাজারী রয়েছে। প্রযুক্তির  সহায়তায় জানা যায়, উক্ত আসামী দীর্ঘদিন ধরে নীলফামারী, টাঙ্গাইল, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় আত্বগোপনে থাকে। উক্ত আসামী এবং অপর আসামী সুমন বয়স্কসহ ১টি ট্রাক ক্রয় করে ডাকাত দলের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে আসছে।তারা ঘটনার দিন নীলফামারী ইপিজেড এলাকা থেকে ডাকাত চক্রের নেতৃত্বে থাকা সদস্যরাসহ অন্যরা তাদের মোবাইল বন্ধ করে ঘটনাস্থলে আসে।ডাকাত সদস্যরা সু-কৌশলে ০১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের বড়ইল বনকালি গ্রামস্থ উক্ত মামলার বাদী মোঃ ফজলুল করিম টুটুল এর ফার্মে প্রধান গেইট এর তালা ভেঙ্গে ট্রাকটি সীমানা প্রাচীরের ভিতরে রেখে খামারের রক্ষনা-বেক্ষনকারী সবুর, লতিফুর রহমান, নয়ন রায়দেরকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত, পা চোখ বেধে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। পরবর্তীতে তারা মুখের বাধন কৌশলে খুলে  চিৎকার করলে আশ পাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে। অভিযানে খানসামা থানার বিষ্ণপুর গ্রামের ভদ্র দাস এর ছেলে সুমন দাস ওরফে বয়স্ক (২৬) এর বিরুদ্ধে ৪ টি, কোতায়ালী থানার নুনাইছ গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে আল মামুন (৩০), শালকী গ্রামের মৃত পুলিন দাসের ছেলে চিত্র দাস ৪০), খানসামা থানার দাশপাড়া গ্রামের রাম প্রসাদ চন্দ্র রায়ের ছেলে ভারত প্রসাদ চন্দ্র রায় (২৭) এর বিরুদ্ধে ৪ টি, বোচাগন্জ থানার শুটকীবাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে সবুজ ইসলাম (২৫) এর বিরুদ্ধে ১টি, ওসমানপুর (মুন্সিপাড়া) গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে শাহ আলম (৪০) এর বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে।নীলফামারী জেলার কোতয়ালী থানার কাচারী বাজার (বড়সংঘইলশীল) গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলেআতিকুল ইসলাম পাঠাও (৪২) এর বিরুদ্ধে ১০ টি মামলা রয়েছে।গ্রেফতারকৃত ডকাতরা আন্ত-বিভাগীয় ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় আগ্নগোপনে থেকে ডাকাতি পরিকল্পনা করে এবং ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে। টার্গেট নির্ধারনের পর তারা একটি পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় মিলিত হয়ে চুরি/ডাকাতি করে আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন জায়গায় গা ঢাকা দেয়। পুলিশের অভিযান টিম তাদের অবস্থানগুলি সনাক্ত করে ধারাবহিকভাবে অভিযান অব্যাহত রাখে। তাদের মোবাইল নম্বর ও স্থান ঘন ঘন পরিবর্তন করায় অভিযান টিমকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তারা দিনাজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দুই দফায় ০৮ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ডাকাত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকায় কয়েকটি তথ্য এখানে উপস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে পুলিশ সুপার ইফতেখার আহমেদ পিপিএম প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ