মাঠে মাঠে ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ
ধান গাছের গোড়া থেকে বেরুনো পাতার একটা অংশ মরে ধারণ করেছে লালচে বর্ণ। পাতাগুলো অবশ্য গোড়ার বাইরের অংশ। ভেতরের গাছগুলো কাঁচা-পাকার মিশ্রণ। গাছের মাথায় ধরা শীষগুলো পরিপক্ক রূপ নিয়েছে। কিন্তু পুরো ধানে এখনও পাক ধরেনি।তবে আগাম জাতের লাগানো কিছু জাতের ধান পেকেছে। যা কৃষক স্বল্প পরিসরে কাটতে পারছেন। কেউ গোলায় ভরছেন। আবার অনেকেই সেসব ধান বিক্রি করছেন বাজারে। কিছু ব্যাপারি সেসব গেরস্থের বাড়ি গিয়েও আগামজাতের ধান খরিদ করছেন।সবমিলে মাঠে মাঠে মৌ মৌ ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে কাঁচা-পাকা ধান। পুরোদমে সেই ধানের গোড়ায় কাস্তে চালাতে বড়জোর তিন সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে। এরপরই শুরু হবে ধান কাটা-মাড়াইয়ের ধুম। গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় ক্ষেত আর বাড়ির উঠোনে ব্যস্ত সময় পার করবেন কৃষাণ-কৃষাণীসহ শ্রমজীবী মানুষগুলো।চলতি রোপা আমন মৌসুমে বগুড়ার ১২টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৮১ হাজার হেক্টর জমিতে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন জাতের ধান। এরমধ্যে বিআর-৪৯, ব্রি ধান ৩৩, ৬২, বিনা-৭, কাটারি অন্যতম। আর আগামজাতের মধ্যে অন্যতম ব্রি ধান ৩৩, ৬২ ও বিনা-৭।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে সদর, গাবতলী, শেরপুর, কাহালু, নন্দীগ্রাম, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া ও শাজাহানপুর উপজেলায় অন্যবারের মতো এবারও অনেক জমিতে আগামজাতের ধান লাগিয়েছেন কৃষকরা।কৃষক আবু সাঈদ ও মজিবর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তারা বেশ কয়েক বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের ধান লাগিয়েছেন। ইতোমধ্যে দেড় বিঘা করে জমির ধান কাটা-মাড়াই করেছেন। তবে আগামজাতের ধানের ফলন তুলনামূলক কিছুটা কম হয়। এরপরও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলন পেয়েছেন-যোগ করেন এই দুইজন কৃষক।শহিদুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান, হায়দার আলীসহ বেশ কয়েকজন কৃষক বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে ধানের জমিতে পর্যাপ্ত সেচ দিতে হয়েছে। অনেকটা প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেক জমিতে পোকামাকড়ের উপদ্রব দেখা দেয়। এতে কীটনাশক বাবদ ব্যয়ও বাড়ে। তবে শেষের দিকে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের গাছে তেজ বেড়ে যায়। যার প্রভাবে ধানগুলোর শীষ আশানুরূপ ভালো হয়েছে। এ থেকে ফলন ভালো হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন কৃষকেরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, এ জেলায় চলতি মৌসুমে রোপা আমনের আবাদ আশানুরূপ হয়েছে। আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে। তবে আগাম জাতের লাগানো কিছু কিছু জমির ধান কৃষকরা কাটছেন। সবমিলে এবার রোপা আমনের বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা করেন কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।