ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল দুনিয়ার পরিধি যত বৃদ্ধি পাবে, অপরাধের মাত্রাও সমানুপাতিক হারে বাড়তে থাকবে আর ততবেশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন হবে। ১২ অক্টোবর গাজীপুরের ছয়দনায় ফাইভ স্টার মোবাইল কারখানার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিপক্ষে যারা কথা বলেছে তারাই এর সুবিধা নিচ্ছে- এমনটি জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন করলাম, তখন আমাদের তুলোধোনা করা হল। অথচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এন্ট্রি করেছেন তার ফেক আইডির জন্য। এতদিন পর তিনি টের পাচ্ছেন, এ আইনটা কতটা জরুরি দরকার ছিল।’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রযুক্তিগত যে সক্ষমতা অর্জন করা দরকার, বাংলাদেশ এখন সেই জায়গায় পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। ফেসবুকের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক আছে, কোনো ফেক আইডি যদি থাকে, আমরা চিহ্নিত করতে পারি, সেটা যদি রিপোর্ট করা হয়, ফেসবুক আমাদের এটা সরিয়ে ফেলতে সহযোগিতা করে।’ আমরা কেবল ফেসবুকের ওপর নির্ভরশীল থাকব না। আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা থাকছে। আমরা আশা করছি, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের ভেতরে আমাদের সক্ষমতা তৈরি হবে; যাতে আমরা পুরাটা মনিটর করতে পারি। অতএব অসহায়ের মতো বসে থাকতে আমরা এখন বিরাজ করি না। দেশের মোবাইল কারখানা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা আগে ইলেকট্রনিক্স শতভাগ আমদানি করতাম। এখন বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্সের যে বাজারে রয়েছে, তার ৭০ শতাংশ আমার দেশের কোম্পানির দখলে এবং এ পণ্যগুলো বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। ‘বিদেশি যেসব পণ্য বা ব্র্যান্ড আছে, আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করব; আমাদের ব্র্যান্ড বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে। আমরা দেশে সেই পরিস্থিতি বা অবস্থা তৈরি করেছি। সেজন্য আজ বিদেশিরা আমাদের দেশের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। প্রতিযোগিতার জায়গাটা ইতিমধ্যে আমরা প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছি। এ দেশে এসে যে পণ্য বিক্রি করতে আসবে তাকে অন্ততপক্ষে সংযোজন করতে হবে এইটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। কর্মসংস্থানের বিষয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের বড় চ্যালেঞ্জের নাম শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। আমাদের বহু জায়গা রয়েছে, যেখানে আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের অথবা সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের কর্মসংস্থান করতে পারি। কিন্তু আমি এখানে ঘুরে দেখলাম, আমাদের অতি সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত, এইচএসসি পাস করছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়া বা বাংলায় পড়া শিক্ষার্থীরা যেভাবে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে, এটি কর্মসংস্থানে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে। দেশে মোবাইল কারখানা স্থাপন বা দেশীয় মোবাইল ম্যানুফেকচারিংয়ে সরকার অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে বলেও জানান মোস্তাফা জব্বার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক ও অন্যরা। প্রতিষ্ঠানটির সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে এ কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এ কারখানায় বর্তমানে অ্যাসেম্বলিংয়ের মাধ্যমে মোবাইল সেট উৎপাদন করা হবে। এ কারখানার মধ্য দিয়ে পাঁচ শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান হবে।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ