গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস ভবন মেরামত কাজের বিল বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারকে না দিয়ে অন্য ঠিকাদারের নামে উত্তোলন করে আত্মসাত এবং ঠিকাদারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিনেও বিল না পেয়ে অবশেষে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ বেলাল হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফান এন্টারপ্রাইজের মালিক অহিদুর রহমান।অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে উন্নয়ন তহবিলের আওতায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস ভবন মেরামত কাজের (প্যাকেজ নং e -Tender/ Gazi/kali/Rev২০২০-২১/৩৩) দরপত্র আহবান করা হলে গত ৩০/০৯/২০২০ তারিখে অনুষ্ঠিত লটারিতে মেসার্স রাফান এন্টারপ্রাইজ কার্যাদেশটি লাভ করে। পরে নকশা, ডিজাইন, কাজের তফসিল ও নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হলে তা মেজারমেন্ট বইতে লিপিবদ্ধ (MB No- ৩৪/২০-২১, Page No, ২১-৫৪) এবং ২১ লাখ ৭ হাজার ৯৭৮ টাকা ৩৭ পয়সার বিল ফরম প্রস্তুত করা হয়। বিল অনুমোদনের প্রেক্ষিতে গত ০৫/০৫/২১ তারিখে ৯ লাখ ৪ হাজার ৭শত ১০ টাকার একটি চেক (No CC-৫০৯৯২৫৯৯১) এবং ২৩/০৯/২১ তারিখে ৭ লাখ ৭১ হাজার ৭০ টাকার অপরটি একটি চেক (নং CC-৫০০২১৯২১৭) মেসার্স রাফান এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে স্বাক্ষর হয়। মেসার্স রাফান এন্টারপ্রাইজের নামে দুইটি চেক স্বাক্ষর হলেও তা না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক অহিদুর রহমান সোনালী ব্যাংক লিঃ এর কালীগঞ্জ শাখায় যোগাযোগ করেন। সেখানে তিনি জানতে পারেন দুইটি চেক মেসার্স রাফান এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে প্রদানের জন্য নথিভুক্ত করা হলেও পরে মেসার্স আসরাফী ট্রেডার্সকে চেক দুইটির অর্থ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে এডভাইস করা হলে ব্যাংক উক্ত প্রতিষ্ঠানকে অর্থ প্রদান করে। পরে এ বিষয়ে অহিদুর রহমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর তার প্রাপ্য অর্থের চেক ফিরিয়ে দিবে বলে আশ্বস্থ্য করেন। কিন্তু তারপরও চেক বা অর্থ না পেয়ে তিনি উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তাকে বিভিন্ন পেন্ডিং মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানী করার হুমকি প্রদান করেন। পরে তিনি নিরুপায় হয়ে অর্থ আদায়ের জন্য গত ০৭/০২/২০২০২৩ইং তারিখ তার আইনজীবির মাধ্যমে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ বেলাল হোসেন সরকারের নামে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন।   বিষয়ে মেসার্স রাফান এন্টারপ্রাইজের মালিক অহিদুর রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস ভবন মেরামত কার্যাদেশটি পাওয়ার পর আমি শতভাগ কাজ সম্পন্ন করে বিলের জন্য আবেদন করি। দীর্ঘ দিনেও বিল না পেয়ে আমি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বললে তিনি আামাকে জানান, আপনার বিল হয়েছে, ব্যাংকে যোগাযোগ করেন। পরে ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারি আমার কাজের বিল মেসার্স আসরাফী ট্রেডার্সকে প্রদান করে দেওয়া হয়েছে। পুনরায় আমি উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে বিল নিয়ে কোন কথা বলতে নিষেধ করেন। অন্যথায় থানার পেন্ডিং ডাকাতি, চুরি ও অস্ত্র মামলাসহ ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। তার হুমকির কারণে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি।পরে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ বেলাল হোসেন সরকারের কার্যালয়ে তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি, এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে জানতে পারি ভুলবশত চেক দুইটির অর্থ অন্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে। মেসার্স রাফান এন্টারপ্রাইজকে প্রাপ্য টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এখনো কেন টাকা পরিশোধ করা হয়নি তা আমি অবগত নই।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ