মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের কুঞ্জবন এলাকার শতাধিক কৃষকের মুখে হাসি ফুটিছেন এলাকার রিপন রায়। অনাবাদি শক্ত জমিতে নিজ অর্থ ব্যয়ে পানি সেচেরদ উপযোগী করে চাষ যোগ্য করেছেন কৃষকদের জমি। কৃষি অফিসের কোন রকম সহযোগীতা ছাড়াই কৃষকের ঘরে উঠবে সোনালী ফসল। প্রায় ৩ শতাধিক বিঘা জমিতে সবুজের বিপুল সমারোহ। মনের আনন্দে কৃষক কৃষাণীরা ফসলের মাঠে তপ্ত রোদে করে যাচ্ছেন কাজ । তাদের শরীরে নেই কোন ক্লান্তির চাপ। চোখে মুখে ভেসে উঠছে আনন্দের প্রশান্তির খানিক টা অনুভূতি। সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের ২ বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য রিপন রায়। পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক, একি সাথে নিজের ও দেশের খাদ্য চাহিদা পুরন করতে ঝাপিয়ে পড়ছেন কৃষি কাজে। এলাকার কৃষকদের অনাবাদি এক ফসলি পতিত জমিগুলোতে পানি সেচ অভাবে ফসল আবাদ করা সম্ভব হয়নি। খাদ্য ঘাটতি পূরন করতে নিজ অর্থ ব্যয়ে কৃষকের অনাবাদি জমি চাষে যোগ্য করে তুলতে করেছেন কৃষকদের আগ্রহী। সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের কুঞ্জবনে ১২ শত বিঘা জমি এক ফসলী ক্ষেত করছিল কৃষকরা। চলিত মৌসুমে রিপন রায় নিজ অর্থ ব্যয়ে লাংলিয়া ছড়ায় মেশিন স্থাপন করে দেড় হাজার ফুট পাইপ টেনে পানি সেচের করে দিয়েছেন জমিতে সেচের সুব্যবস্থা। যার ফলে প্রায় ৩ শত বিঘা অনাবাদি কৃষি জমিতে বোরো ধান আবাদ সক্ষম হয়েছে কৃষক। কুঞ্জবন এলাকার কৃষক আইয়ুব আলী(৩০), মশাইদ মিয়া, কুতুব মিয়া, মাসুক মিয়া, শিপন মিয়া, সুজন মিয়া, শহীদ মিয়া, আনোয়ার মিয়া, আব্দুল আলী, বশির মিয়া, মারুফ মিয়া, আফতাব মিয়া, ছত্তার মিয়া, আহাদ মিয়া, ছত্তার মিয়া, আলাল মিয়া, লোকমান মিয়া, সয়াল মিয়া, ছালেক মিয়া, ফয়জুর রহমান, আছকর মিয়া, সুজন মিয়াসহ প্রমুখ শতাধিক কৃষক প্রায় ৩ শত বিঘা অনাবাদি জমি চাষ করেছেন। কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমি চাষ করতে তাদের খরচ পড়েছে ৪ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ১৮ মন ধান ফলবে বলে তারা আশাবাদী। বিগত কয়েক বছর পূর্বে একবার লাংলিয়া ছড়ায় বাঁধ দিয়ে ১২০০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল। বর্তমানে ফিনলে  চা বাগান উজানে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে ফেলার ফলে লাংলিয়া ছড়ায় পানির প্রবাহ তেমন টা থাকে না। লাংলিয়া ছড়ার পানি ব্যবহার করা গেলে ২ হাজার বিঘা জমিতে চলতি মৌসুমে শাক-সবজিসহ ধান চাষে সম্ভব হতো। তারা কোন সময়ই সরকারি কোন ভূর্তুকি বা সহযোগীতা পাচ্ছেন না। তারা জানেন না কৃষি কাজে সরকারি ভূর্তুকি বা কৃষি কার্ড কি। কৃষি অফিসের সহযোগীতা ও পানি সরবরাহ পেলে ধান, গম, ভূট্রাসহ ফসলে মাট ভরে উঠতো। এই জমি গুলো উচু হওয়ায় পাহাড়ি ঢল বা বন্যায় নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। শুধু ফসল কেটে নিয়ে আসতে রাস্তা না থাকায় তারা আছেন বিপাকে। ক্ষেতের মধ্য দিয়ে ১৭ ফুট প্রস্থ কামারতলা গোপাট নামে একটি গোপাট ছিল। যে গোপাট দিয়ে কৃষকরা ধান কেটে নিয়ে আসতো। আর এর পাড় দিয়ে গ্রামের মানুষ চলাচল করতো। এই গোপাটের আজ আর অস্তিত নেই। কৃষকরা ধান উঠাতে এখন বিপাকে পড়েছেন।  মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, মৌলভীবাজার জেলায় ৫৬৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। আবাদ হয়েছে ৫৭৯৯৮ হেক্টর। শ্রীমঙ্গল কুঞ্জবন এলাকায় এধরনের উদ্দ্যোগের বিষয় তিনি অবগত নন। পরবর্তীতে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে খোঁজ খবর নিয়ে বলেন, রিপন রায় নিজ উদ্যোগে এমন কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বলে দিবো। আগামীতে সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে রিপন রায়কে সহযোগিতা করার জন্য এবং আমি নিজই তা তদারকি করবো।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ