শেরপুরে ভূমি অফিসের চিরাচরিত জনদুর্ভোগ, জনমতের সমলোচনা, প্রচলিত ধ‍্যান-ধারণা ভেঙ্গে দিয়ে উন্নত সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে দালালমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার থেকে উপজেলা ভুমি অফিসে দালালদের উৎপাত ঠেকাতে ও ভুমি সংক্রান্ত কাজে আগত জনসাধারনের নানা দুর্ভোগ লাঘব করতে দালাল মুক্ত ঘোষণা সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ উজ্জ্বল হোসেন।দালাল মুক্ত ঘোষণার প্রথম দিনে মোঃ মিজানুর রহমান পিতা- লিয়াকত আলী, সাং- বাদাতেঘরিয়া, কামারিয়া এবং মোঃ আশ্রাফ আলী, পিতা- আলমাছ আলী সাং- ৭নং চর, কামারেরচর, শেরপুর সদর,শেরপুর যারা দীর্ঘ দিন যাবত নামজারী কাজে দালালি করে আসছিল এবং জনগনের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। প্রথম বারের মতো তাদেরকে ভবিষ্যতে এহেন কাজ আর না করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।দ্বিতীয় দিনে মোঃ শাহাজাহান খান,পিতা- মতিউর রহমান (সরকার/দলিল লেখক সহায়তাকারী) সাং- সাপমারী, ভাতশালা এবং মোশারফ হোসেন,পিতা- শাখাওয়াত হোসেন, সাং- সাপমারী, শেরপুর সদর, শেরপুর যারা দীর্ঘ দিন যাবত নামজারী কাজে দালালি করে আসছিল এবং জনগনের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। তাদেরকে ভবিষ্যতে এহেন কাজ আর না করার শর্তে মুচলেকা ও জরিমানা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।সহকারী কমিশনার (ভূমি) উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আমাদের অফিস শতভাগ অনলাইন হওয়াতে ক্যাশলেস ও দালালমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।ভূমির মালিকগণকে নামজারি সহ ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা গ্রহণের জন্য সরাসরি আবেদন করতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। সার্বিক নিরাপত্তা বিধান, দালালের দৌরাত্ব দূরীকরণ, সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা ভূমি অফিসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোতে ৬টি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, ভূমি বিষয়ক বিভিন্ন সেবা প্রাপ্তির জন্য প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ উপজেলা ভূমি অফিসে আসেন কিন্তু অফিসে এসে তারা বুঝতে পারে না কোথায় যাবে, কে তার সমস্যার বিষয়ে শুনবে, সমস্যার সমাধান দিবে ইত্যাদি। যে কারণে তারা মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীর খপ্পরে পড়ে এবং অহেতুক হয়রানির স্বীকার হতো। এ সকল সমস্যা সমাধানের জন‍্য উপজেলা ভূমি অফিস চত্বরে আগত সকল ভূমি বিষয়ক সেবা প্রত্যাশী জনগণের সমস্যা ও অভিযোগ সমূহ সমাধানের জন‍্য স্থাপন করা হয়েছে ভূমি শিক্ষা ও সেবালয়। জমির নামজারি, ভূমিকর পরিশোধ, খাসজমি বরাদ্দ পেতে, জমি ক্রয়-বিক্রয় করার ক্ষেত্রে খোঁজ খবর জানতে এবং রেকর্ড জানা সহ ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে এসে মানুষ কখনো দালালের খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত টাকা গচ্চা দিয়েছে, কখনো বা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারি দ্বারা ঘুষ, হয়রানী বন্ধ করতে এখন আর সহকারি কমিশনার (ভূমি) এবং আগত সেবা গ্রহীতাদের মাঝে কোন প্রকার দেওয়াল বা দরজা নেই।সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন আরো বলেন, নামজারি করতে প্রয়োজন যথাযথভাবে পূরণকৃত আবেদন ফরম, সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি, ২০ টাকা কোর্ট ফি,ভোটার আইডি কার্ড/জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত ফটোকপি, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা,সংশ্লিষ্ট খতিয়ানের ফটোকপি/ সার্টিফাইড কপি, মূল ওয়ারিশ সনদ অনধিক তিন মাসের মধ্যে ইস্যুকৃত (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), মূল দলিলের সার্টিফাইড/সত্যায়িত ফটোকপি, সর্বশেষ জরিপের পর থেকে বায়া দলিল/পিট দলিল এর সার্টিফাইড/ফটোকপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ভূমির ক্ষেত্রে অনলাইন মৃত্যু সনদ। এক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত না দিতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। সরকার নির্ধারিত ফি সমূহ কোর্ট ফি-২০ টাকা, নোটিশ জারি ফি-৫০ টাকা, রেকর্ড সংশোধন ফি-১০০০ টাকা, মিউটেশন খতিয়ান ফি-১০০ টাকা, সর্বমোট-১১৭০ টাকা।অনলাইনে সম্পূর্ণ টাকা বিকাশ / রকেট/ নগদ এর মাধ্যমে টাকা জমা দিন।এসময় শেরপুর সদর উপজেলা ভূমি অফিস দালালমুক্ত করণ কাজে শেরপুরের সর্বসাধারণের সহযোগিতা একান্ত ভাবে কামনা করেন তিনি। এছাড়া ভূমি সেবায় যে কোন অভিযোগ/সাহায্য/পরামর্শের জন্য নিঃসংকোচে ১৬১২২ নাম্বারে কল করতে অথবা অফিস চলাকালীন সময়ে সহকারী কমিশনার (ভুমি) শেরপুর সদর এর সাথে সরাসরি কথা বলতে আহ্বান জানিয়েছেন।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ