দীর্ঘ দুই দশক বিদেশে পালিয়ে থাকা নারায়ণগঞ্জ শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি জাকির খানকে বিদেশী পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করেছে ব়্যাব-১১৷ রাজধানির বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় ব়্যাব-১১ এর সদর দপ্তরে জাকির খানকে গ্রেপ্তারের বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন র‌্যাব।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানান, নারায়ণগঞ্জের একসময়কার শীর্ষ সন্ত্রাসী, একচ্ছত্র, ক্ষমতার অধিকারী আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর গডফাদার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যপক আলোচিত নাম জাকির খান। যার নামে ৪টি হত্যাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে এবং বিভিন্ন সময়ে তিনি এসকল মামলায় জেল খাটেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি আরও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন। এসময় তিনি নারায়ণগঞ্জ এর দেওভোগ এলাকায় বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সম্রাজ্য গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে দেওভোগ এলাকার অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পিছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শহরের ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যাকান্ডের পরে তিনি দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। এ সময়ে বিভিন্ন মামলায় বিজ্ঞ আদালতে জাকির খান দোষী সাব্যস্থ হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে সাজা প্রদান করেন। এর পর থেকেই গ্রেফতার এড়াতে জাকির খান দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন।দীর্ঘদিনের পলাতক এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের গ্রেফতারে র‌্যাব-১১ এর ধারাবাহিক কার্যক্রমের প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন পলাতক র্শীষ সন্ত্রাসী জাকির খান এর বিষয়ে র‌্যাব-১১ খোঁজ-খবর শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ রাতে র‌্যাব-১১ এর নারায়ণগঞ্জের একটি বিশেষ অভিযানে ডিএমপি ঢাকার ভাটারা থানার বসুন্ধরা এলাকা হতে ০১টি বিদেশী পিস্তলসহ নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাব্বির হত্যা মামলার অন্যতম আসামী জাকির খানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী জাকির খানের বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে সন্ত্রাসমূলক অপরাধ দমন বিশেষ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় আসামী জাকির খানের ১৭ বছরের সাজা হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে তার সাজা কমে ৮ বছর হলেও তিনি গ্রেফতার এড়াতে দেশে ও বিদেশে প্রায় ২১ বছর পলাতক ছিলেন। মূলত ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যা মামলায় আসামী হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, তিনি দীর্ঘ দিন থাইল্যান্ডে আত্মগোপনে ছিলেন এবং সম্প্রতি ভারত হয়ে তিনি বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে তিনি পরিচয় গোপন করে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করছিলেন।গ্রেফতারকৃত জাকির খানের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। সূত্রমতে, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেএমইএ’র সহসভাপতি সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলার অন্যতম আসামী জাকির খান। ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী লৎফর জামান বাবর নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় জেলা পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে এসে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী দেন। এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এরপরই নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে ঢাকার সেগুনবাগিচায় তৎকালীন প্রভাবশালী মন্ত্রী আব্দুল মতিন চৌধুরীর বাসভবনে আশ্রয় নেয় জাকির খান। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর ওই মন্ত্রীর সহায়তায় থাইল্যান্ডে পালিয়ে যায় সে।

এক্সক্লুসিভ রিলেটেড নিউজ

সর্বশেষ